বাংলাদেশে ভালো ব্রান্ডের এয়ার কন্ডিশনার

বাংলাদেশে ভালো ব্রান্ডের এয়ার কন্ডিশনার

বাংলাদেশের গরম আবহাওয়ায় এয়ার কন্ডিশনার (AC) এখন আর বিলাসিতা নয়, বরং একান্ত প্রয়োজন। গ্রীষ্মকালে যখন দিনের তাপমাত্রা ৩৫-৪০ ডিগ্রি ছুঁয়ে যায়, তখন ঘরে একটি ভালো ব্র্যান্ডের এসি থাকার প্রয়োজনীয়তা বোঝা যায়।

কিন্তু বাজারে এত রকমের AC ব্র্যান্ড আর মডেল থাকায় অনেকেই দ্বিধায় পড়েন- “কোনটা টিকবে বেশি দিন?”, “কারটায় বিদ্যুৎ খরচ কম?” কিংবা “কোন ব্র্যান্ডের সার্ভিস ভালো?”

এই আর্টিকেলে আমরা বাংলাদেশে পাওয়া জনপ্রিয় ও নির্ভরযোগ্য AC ব্র্যান্ডগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব, যাতে আপনি বুঝে শুনে আপনার বাজেট ও প্রয়োজন অনুযায়ী সঠিক সিদ্ধান্তটি নিতে পারেন। তাহলে চলুন শুরু করা যাক।  

এয়ার কন্ডিশন কি এবং কিভাবে কাজ করে?

এয়ার কন্ডিশনার বা এসি (AC) হচ্ছে এমন একটি বৈদ্যুতিক যন্ত্র, যা ঘরের গরম ও আর্দ্র বাতাসকে শুষে নিয়ে ঠান্ডা, আরামদায়ক পরিবেশ তৈরি করে। এটি চারটি প্রধান উপাদান দিয়ে তৈরিঃ 

  • কম্প্রেসর
  • কনডেনসার
  • এক্সপানশন ভাল্ভ এবং 
  • ইভাপোরেটর কয়েল। 

এসি চালু করার পর এটি প্রথমে ঘরের ভিতরের গরম বাতাস ফিল্টারের মাধ্যমে শোষণ করে নেয়। এই গরম বাতাস ইভাপোরেটর কয়েল-এর মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময়, এসির ভিতরের ফ্রিজিয়েন্ট (এক ধরনের ঠান্ডা তরল গ্যাস) গরম বাতাস থেকে তাপ শোষণ করে নিয়ে বাষ্পে পরিণত হয়। 

এবার সেই গ্যাসীয় ফ্রিজিয়েন্ট কম্প্রেসারে প্রবেশ করে। এখানে এটি উচ্চচাপে সংকুচিত হয়ে আরও গরম হয়, যাতে দ্রুত ঠান্ডা করা যায়। সংকুচিত গরম ফ্রিজিয়েন্ট কনডেনসারে প্রবেশ করে এবং ফ্যানের মাধ্যমে বাইরে থেকে ঠান্ডা বাতাস এনে সেটিকে তরলে রূপান্তর করে। 

এক্সপানশন ভাল্ভ সেই তরল ফ্রিজিয়েন্টকে আবার চাপ কমিয়ে ঠান্ডা অবস্থায় ইভাপোরেটরে পাঠায়। ইভাপোরেটর কয়েলে ফ্রিজিয়েন্ট তরল বাষ্পে রূপ নেয় এবং ঠান্ডা বাতাস তৈরি করে। একবার এই ঠান্ডা বাতাস তৈরি হলে, এসির ফ্যান সেই ঠান্ডা বাতাস ঘরের চারদিকে ছড়িয়ে দেয়। এই পুরো প্রক্রিয়াটি চলতে থাকে যতক্ষণ না রুমের তাপমাত্রা আপনার সেট করা মাত্রায় পৌঁছে।

আরও পরুনঃ- Best AC Brand in Bangladesh

 বিভিন্ন ধরণের এসি (Types of AC)

এয়ার কন্ডিশনারের চাহিদা, ঘরের আয়তন ও ব্যবহারের ধরন অনুযায়ী বাজারে বিভিন্ন ধরনের এসি পাওয়া যায়। প্রতিটির আছে নিজস্ব সুবিধা ও সীমাবদ্ধতা। নিচে বাংলাদেশের বাজারে প্রচলিত সবচেয়ে জনপ্রিয় এসির ধরনগুলো তুলে ধরা হলো:

স্প্লিট এসি (Split AC)

এই ধরনের এসি সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় ঘর বা অফিসের জন্য। এটি দুটি ইউনিটে বিভক্ত। একটি ভিতরে (ইনডোর) থাকে এবং আরেকটি বাইরে (আউটডোর)। ইনডোর ইউনিট ঠান্ডা বাতাস সরবরাহ করে আর আউটডোর ইউনিট তাপ বের করে দেয়।

উইন্ডো এসি (Window AC)

উইন্ডো এসি সাধারণত একটি ইউনিটের হয় এবং জানালায় বসানো থাকে।একসময় এটি খুব জনপ্রিয় ছিল, তবে এখন তুলনামূলক কম ব্যবহৃত হয়।

পোর্টেবল এসি (Portable AC)

এই এসিগুলো ছোট ও চাকার সাহায্যে স্থানান্তরযোগ্য। যাদের বাসায় স্থায়ীভাবে এসি বসানো সম্ভব না বা ভাড়া বাসায় থাকেন, তাদের জন্য এটা দারুণ সমাধান। 

ক্যাসেট এসি (Cassette AC)

এটি মূলত অফিস, শোরুম বা বড় দোকানগুলোর জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি সিলিং-এর ভিতর বসানো হয় এবং চারদিকে ঠান্ডা বাতাস ছড়িয়ে দেয়।

সেন্ট্রাল এসি (Central AC)

বড় ভবন, শপিং মল বা হোটেলের জন্য ব্যবহৃত হয়। একটি মুল ইউনিট থেকে পাইপের সাহায্যে এটি পুরো ভবনের বিভিন্ন কক্ষে একসাথে ঠান্ডা বাতাস সরবরাহ করতে সক্ষম।

বাংলাদেশের বাজারে জনপ্রিয় এসির মডেল ও ব্র্যান্ডসমূহ

বাংলাদেশের গরম ও আর্দ্র আবহাওয়ার জন্য এসি এখন অনেকটা নিত্যপ্রয়োজনীয় একটি পণ্য। তবে বাজারে শত শত ব্র্যান্ড ও মডেল থাকায় অনেকেই দ্বিধায় পড়ে যান। এই অংশে আমরা বাংলাদেশে সবচেয়ে জনপ্রিয় চারটি AC ব্র্যান্ড এবং তাদের কিছু সেরা মডেল নিয়ে আলোচনা করবো।

১। GREE AC

GREE চীনের একটি বিশ্বখ্যাত এসি ব্র্যান্ড, যা বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরেই জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে। উন্নত প্রযুক্তি, টেকসই বিল্ড কোয়ালিটি, বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ইনভার্টার সিস্টেম এবং মানসম্মত সার্ভিস- সবকিছুতেই এক নাম্বার বলা চলে এই ব্র্যান্ডটিকে। নিচে GREE-এর তিনটি জনপ্রিয় মডেলের বিস্তারিত তুলে ধরা হলোঃ 

GREE GS-18XLMV32 Inverter Lomo Split Type Air Conditioner – 1.5 TON
এটিতে মরিচা প্রতিরোধী গোল্ডেন ফিন ইভাপোরেটর ব্যবহার করা হয়েছে। ক্যাপাসিটি: ১.৫ টনপাওয়ার কনজাম্পশন: ১৬৪০ ওয়াটকম্প্রেসার: ইনভার্টার রোটারিইনডোর/আউটডোর ইউনিটে লোয়ার নয়েজ থাকবে। টার্বো কুলিং, স্লিপ মোড, অটো রিস্টার্ট রয়েছে।
GREE GS-18XFA32 Fairy Split Type Air Conditioner – 1.5 TON
লো ভোল্টেজে স্টার্ট হবে, 3D এয়ার ফ্লো থাকায় ঘরের সব কোনায় থান্ডা বাতাস পৌঁছাবে।   ক্যাপাসিটি: ১.৫ টনপাওয়ার কনজাম্পশন: ১৮৩০ ওয়াটকম্প্রেসার: নন-ইনভার্টার রোটারিএতে রয়েছে গোল্ডেন ফিন কনডেনসার, ইন্টেলিজেন্ট ডিফ্রস্টিং, I-Feel ও Comfortable Sleeping Mode, অটো ক্লিন ফিল্টার, এনার্জি সেভিং। 
GREE GS-24XFA32 Fairy Split Air Conditioner – 2 TON
দীর্ঘস্থায়ী কুলিং ও বিশুদ্ধ বাতাস পেতে এটিতে Copper কন্ডেনসার, R32 রেফ্রিজারেন্ট ও Cold Plasma প্রযুক্তি রয়েছে। ক্যাপাসিটি: ২ টনপাওয়ার কনজাম্পশন: ২২০০ ওয়াটকম্প্রেসার: রোটারি এসির Energy Efficient Ration (EER): 3.51 মাত্র। তাছাড়া এতে থাকছে LED ডিসপ্লে, টার্বো মোড, ইকো মোড, টাইমার ও স্মার্ট রিমোট। 

২। Haier AC

Haier ব্র্যান্ডটি বাংলাদেশে ইনভার্টার এসির জন্য ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। পাওয়ারফুল কুলিং, ভালো ডিজাইন এবং বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী হওয়ার কারণে Haier এখন মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে শুরু করে প্রফেশনাল ইউজারদের মাঝেও পছন্দের একটি নাম। নিচে Haier-এর তিনটি সেরা ইনভার্টার এসি মডেলের ফিচার তুলে ধরা হলোঃ

Haier HSU-18HEATCOOL Inverter Air Conditioner – 1.5 TON
এতে আছে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ইনভার্টার প্লাস প্রযুক্তি। এছাড়াও তিন স্তরের ভোল্টেজ কন্ট্রোলের মাধ্যমে এটি পাওয়ার ফ্লাকচুয়েশন সামলে স্থিরভাবে চলতে পারে।ক্যাপাসিটি: ১.৫ টনপাওয়ার কনজাম্পশন: ২১০০ ওয়াট (কুলিং), ২০৩০ (হিটিং)কম্প্রেসার: ইনভার্টার রোটারিঘর গরম ও থান্ডা উভয় করা যাবে। টার্বো মোড, ইকো মোড, স্মার্ট ডিসপ্লে, অটো ক্লিনিং রয়েছে। 
Haier HSU-19ULTIMATECOOL Inverter Pro Air Conditioner – 1.6 TON
এতে UVC Pro প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে, যা বাতাসে থাকা ক্ষতিকর জীবাণু নির্মূল করে বিশুদ্ধ ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করে।ক্যাপাসিটি: ১.৬ টনপাওয়ার কনজাম্পশন: ১৮৬০ ওয়াট কম্প্রেসার: ইনভার্টার প্রো রোটারিভয়েস কমান্ড সাপোর্ট থাকায় আপনি চাইলে শুধু কথা বলেই এসি চালু, বন্ধ কিংবা টেম্পারেচার কন্ট্রোল করতে পারবেন। এতে রয়েছে Triple Inverter+, 20m Long Distance Airflow, ও টার্বো মোড।  
Haier HSU-24CleanCool Inverter Air Conditioner – 2.0 TON
এই মডেলটিতে থাকা ইনভার্টার (CleanCool Series) এর উন্নত এনার্জি সেভিং ফিচার ৬৫% পর্যন্ত বিদ্যুৎ সাশ্রয় করে। এতে আরো ব্যবহৃত হয়েছে Golden Fin কোটিং, যা এর হিট এক্সচেঞ্জারকে মরিচা থেকে সুরক্ষিত রাখবে। ক্যাপাসিটি: ২ টনপাওয়ার কনজাম্পশন: ২১৩০ ওয়াটকম্প্রেসার: ইনভার্টার রোটারিএর স্বয়ংক্রিয় ক্লিনিং ফিচার এসিকে ভিতর থেকে পরিষ্কার রাখে। থাকছে Anti-Bacterial Coating, Air Purifier Effect, 4D Air Flow-সহ আরো অনেক ফিচার। 

৩। Hisense AC

Hisense বিশ্বব্যাপী পরিচিত একটি ব্র্যান্ড। আধুনিক ইনভার্টার টেকনোলজি ও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী এয়ার কন্ডিশনার সরবরাহ করে Hisense বেশ জনপ্রিয় হয়েছে। বাংলাদেশেও ধীরে ধীরে তাদের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। নিচে তাদের কিছু সেরা ইনভার্টার মডেল তুলে ধরা হলোঃ

Hisense AS12TW4RYETD00BU Inverter Smart Cool Full DC AC – 1.0 TON
মডেলটির ফুল DC ইনভার্টার টেকনোলজি বিদ্যুৎ অপচয় রোধ করে একটি স্টেবল কুলিং দেয়। ক্যাপাসিটি: ১ টনপাওয়ার কনজাম্পশন: ১১২৫ ওয়াটকম্প্রেসার: ইনভার্টার রোটারিএর রিয়েল-টাইম স্মার্ট টেম্পারেচার কন্ট্রোল ঘরের তাপমাত্রা বুঝে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কুলিং এডজাস্ট করে। এতে রয়েছে Auto Clean, Smart Temperature Control, 3D Air Flow, ও একটি LED ডিসপ্লে। 
Hisense 18TW4RMATD01BU Inverter Smart Cool Full DC AC – 1.5 TON
এর Full DC ইনভার্টার প্রযুক্তি রুমের তাপমাত্রা বুঝে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কুলিং অ্যাডজাস্ট করে, ফলে কম খরচে রুম দ্রুত ঠান্ডা হয়।ক্যাপাসিটি: ১.৫ টনপাওয়ার কনজাম্পশন: ১৬৫০ ওয়াটকম্প্রেসার: Full DC ইনভার্টার রোটারিএর Sleep Mode চালু করলে রাতে আরামদায়ক কুলিং পাবেন। ২৪ ঘণ্টার টাইমার ফিচারে আপনি একবার টাইম সেট করলেই এসি নির্দিষ্ট সময়ে চালু/বন্ধ হবে। 
Hisense AS22TW4RXBTD00BU Inverter Smart Cool Air Conditioner – 2.0 TON
দুই টন ক্ষমতাসম্পন্ন এই এসিটি বড় রুম, হলরুম বা অফিস স্পেস সহজেই ঠান্ডা রাখতে সক্ষম। পাশাপাশি এটি Full Inverter প্রযুক্তি ব্যবহারে কম বিদ্যুৎ খরচে দীর্ঘ সময় ঠান্ডা পরিবেশ বজায় রাখতে পারে।ক্যাপাসিটি: ২ টনপাওয়ার কনজাম্পশন: ২০৫০ ওয়াটকম্প্রেসার: Full DC ইনভার্টার রোটারিএর 4-Way Swing ফিচার ঘরের প্রতিটি কোনায় সমভাবে কুলিং ছড়িয়ে দেয়। এতে আরো থাকছে Smart Motion Sensor, Auto Restart, Fast Cooling Mode, ও Intelligent সেন্সর। 

৪। Midea AC

Midea হলো একটি চীনা মাল্টিন্যাশনাল ব্র্যান্ড, যারা বিশ্বব্যাপী বিশ্বস্ত এবং সাশ্রয়ী এয়ার কন্ডিশনার সরবরাহ করায় সমাদৃত। বাংলাদেশে Midea-এর এসিগুলো বাসাবাড়ি কিংবা ছোট অফিসের জন্য খুবই উপযোগী। নিচে Midea-এর তিনটি জনপ্রিয় মডেলের মূল ফিচারসমূহ তুলে ধরা হলোঃ

Midea MSI-12CRN Inverter Air Conditioner – 1.0 TON
১ টন ক্ষমতাসম্পন্ন এই এসিটি ১২০ বর্গফুট পর্যন্ত ছোট রুমের জন্য উপযুক্ত। এটি সর্বোচ্চ ৬০৯.৩ m³/h এয়ার ফ্লো দিয়ে দ্রুত ঠান্ডা পরিবেশ তৈরি করতে পারে।ক্যাপাসিটি: ১ টনপাওয়ার কনজাম্পশন: ১১৭০ ওয়াটকম্প্রেসার: রোটারি ইনভার্টারইন্ডোর ইউনিটের শব্দমাত্রা মাত্র ৩২.৫ ডেসিবেল হওয়ায় এটি খুবই নীরবভাবে চলবে। এছাড়াও থাকছে টার্বো মোড, অটো ক্লিনিং, ইকো মোড, টাইমার ফিচার। 
Midea MSA-18CRN Air Conditioner – 1.5 TON
মাঝারি সাইজের রুমের জন্য উপযুক্ত এই মডেলটি ঘরের সব কোনায় সমানভাবে ঠান্ডা বাতাস ছড়িয়ে দেয়। এর ডাবল-লেয়ার কনডেনসার দিবে দীর্ঘস্থায়ী পারফরম্যান্স।  ক্যাপাসিটি: ১.৫ টনপাওয়ার কনজাম্পশন: ২৫৫০ ওয়াটকম্প্রেসার: নন-ইনভার্টার রোটারিএসিটিতে থাকা মডার্ন LED ডিসপ্লে রিয়েল-টাইম সেটিংস দেখাবে। স্মার্ট রিমোট দিয়ে কন্ট্রোল করা যাবে এর পুরো কনফিগারেশন। সাথে সেলফ ক্লিনিং ও অটো রিস্টার্ট ফিচারও থাকবে। 
Midea MSI-24CRN Inverter Air Conditioner – 2.0 TON
লেটেস্ট ইনভার্টার টেকনোলজি থাকায় মাঝারি থেকে বড় রুম ঠান্ডা করার জন্য উপযোগী এই এসিটি ঘড় থান্ডা করবে কোনরকম বিদ্যুৎ অপচয় না করেই।ক্যাপাসিটি: ২ টনপাওয়ার কনজাম্পশন: কম্প্রেসার: ইনভার্টার রোটারি4D এঙ্গেলে বাতাস ছড়িয়ে দেয়ায় ঘরের প্রতিটি কোণে ঠান্ডা পৌঁছাবে সমানভাবে।। সাথে থাকছে টাইমার, স্মার্ট সেন্সর, অটো ক্লিনসহ আরো অনেক ফিচার। 

নির্ভরযোগ্য ব্যান্ডের পাশাপাশি বিশ্বস্ত প্লাটফর্ম থেকে এসি কেনা অত্যন্ত জরুরি। Apple Gadgets-এ পাবেন ১০০% অরিজিনাল এবং অফিশিয়াল ওয়ারেন্টিসহ বাজারের নির্ভরযোগ্য ব্র্যান্ডের ইনভার্টার ও নন-ইনভার্টার সকল প্রকারের লেটেস্ট মডেল ও আধুনিক ফিচারসমৃদ্ধ এসি।  

এছাড়াও, Apple Gadgets– এ পাবেন পেশাদার কাস্টমার সাপোর্ট, ইনস্টলেশন গাইড, এবং দ্রুত ডেলিভারির সুবিধা। সুতরাং, নিশ্চিন্তে এসি কিনতে চাইলে এখনই ভিজিট করুন applegadgetsbd.com বা আমাদের হটলাইনে যোগাযোগ করুন।

আরও পরুনঃ- এসি ঠান্ডা না হওয়ার কারণ

ইলেকট্রনিক্স স্পেশালিস্টদের মতে, ভালো এসিতে যা থাকা জরুরি

  • ইনভার্টার টেকনোলজি থাকলে এসির পারফরম্যান্স যেমন ভালো হয়, বিদ্যুৎও কম খরচ হয়
  • অভিজ্ঞ টেকনিশিয়ানদের মতে, কপার কনডেনসার যুক্ত এসি ঠান্ডা হয় দ্রুত এবং নষ্টও হয় কম
  • দীর্ঘমেয়াদে ভালো কুলিংয়ের জন্য ইঞ্জিনিয়াররা R32 বা R410A রেফ্রিজারেন্ট ব্যবহার করা মডেলগুলোই বেশি রিকমান্ড করে
  • এসিতে মাল্টি ডাইরেকশন এয়ারফ্লো থাকলে রুমের প্রতিটি অংশে ঠান্ডা সমানভাবে পৌঁছাবে। 
  • Wi-Fi, ভয়েস কন্ট্রোল বা টাইমার ফিচার থাকলে ইউজার এক্সপেরিয়েন্স অনেক স্মুথ হয়। 
  • এসিতে সেলফ-ক্লিনিং ফিচার থাকলে এসি ভিতর থেকে পরিষ্কার থাকে এবং বাতাস থাকে স্বাস্থ্যকর। 
  • গোল্ডেন ফিন বা অ্যান্টি-করোজন কোটিং ব্যবহার করা মডেলগুলো বেশি দীর্ঘস্থায়ী হয়। 
  • স্লিপ মোড থাকলে সারারাত এসি চালিয়া ঘুমানো যায়, আবার বিলও কম আসে। 
  • এসিতে একটি ডিসপ্লে কিংবা স্মার্ট রিমোট থাকলে কন্ট্রোলিং অনেক সহজ হয়ে যায়। 

এসি কেনার আগে যেসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানা দরকার

শুধু ব্র্যান্ড দেখে এসি কিনে ফেললে চলবে না। একটা ভালো এসি আপনার ঘর ঠান্ডা করার পাশাপাশি অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল উঠাবে না, স্থায়িত্ব দেবে এবং ব্যবহারে এনে দেবে স্বস্তি। তাই এসি কেনার আগে কিছু বিষয় ভালোভাবে যাচাই করে নেওয়া উচিত। 

১. এসির টন ও ঘরের আয়তন মিলিয়ে নিন

যে ঘরে এসি বসাবেন, তার সাইজ অনুযায়ী এসির ক্ষমতা (BTU/TON) ঠিক করা প্রয়োজন। যেমন,

  • ৮০–১২০ বর্গফুট ঘরের জন্য ১ টন
  • ১২০–১৮০ বর্গফুট: ১.৫ টন
  • ১৮০–২৫০ বর্গফুট: ২ টন এসি উপযুক্ত

টন কম বা বেশি হলে এসি ঠিকমতো ঘর ঠান্ডা করবে না, বরং বিদ্যুৎ অপচয় বাড়বে।

২. মিটার লোড যাচাই করুন

বেশি টনের এসি চালাতে চাইলে আপনার বাসার বৈদ্যুতিক মিটারে পর্যাপ্ত লোড থাকতে হবে। যেমন, ১.৫ টন বা ২ টন এসি চালাতে চাইলে অন্তত ১ কিলোওয়াট লোড থাকা জরুরি। না থাকলে আগে লোড বাড়িয়ে নিন।

৩. ইনভার্টার নাকি নন-ইনভার্টার?

ইনভার্টার এসি ঘরের তাপমাত্রা অনুযায়ী কম্প্রেসরের স্পিড কন্ট্রোল করে। এতে বিদ্যুৎ কম খরচ হয়। নন-ইনভার্টার এসি যদিও কম দামে পাওয়া যায়, তবে এর বিদ্যুৎ খরচ বেশি।

আরও পরুনঃ- Inverter vs Non-Inverter AC

৪. বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের রেটিং দেখুন

BEE (Star Rating) দেখে এসি কিনুন। ৩ বা ৫ স্টার রেটিং থাকলে বুঝবেন, সেটি বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী। দীর্ঘমেয়াদে এই ধরনের এসি আপনার খরচ অনেক কমিয়ে দেবে।

৫. ফিল্টারের মান দেখুন

একটি ভালো এসিতে ধুলা, জীবাণু এবং দূষিত উপাদান দূর করার মতো শক্তিশালী ফিল্টার থাকা উচিত। এতে শুধু ঠান্ডা না, বরং আপনি পাবেন স্বাস্থ্যকর ও বিশুদ্ধ বাতাস।

৬. ওয়ারেন্টি ও বিক্রয়োত্তর সেবা

এসি কেনার আগে দেখে নিন, কম্প্রেসরের ওয়ারেন্টি কতো বছরের এবং ওয়ারেন্টি পার্টস ও সার্ভিস কভার করে কিনা। একইসঙ্গে, ব্র্যান্ডটির সার্ভিস সেন্টার কোথায় আছে এবং রিভিউ কেমন তাও যাচাই করে নিন।

৭. স্মার্ট ফিচারে বাড়তি সুবিধা 

Wi-Fi কন্ট্রোল, মোবাইল অ্যাপ, টাইমার, অটো ক্লিনিং, স্মার্ট সেন্সর, ইত্যাদি ধরনের স্মার্ট ফিচার থাকলে এসি ব্যবহার আরও সহজ হয়। 

এই লেখায় আমরা বাজারে জনপ্রিয় কিছু এসি ব্র্যান্ড এবং তাদের নির্ভরযোগ্য মডেলগুলো নিয়ে আলোচনা করেছি। পাশাপাশি বিশেষজ্ঞদের মতে ভালো এসি চেনার উপায়ও তুলে ধরেছি। তাই যদি আপনি একটি ইনভার্টার এসি, দীর্ঘস্থায়ী কুলিং, স্মার্ট ফিচার ও ইকো ফ্রেন্ডলি টেকনোলজির খোঁজে থাকেন, তাহলে এই তথ্যগুলো আপনার সিদ্ধান্তকে সহজ করে তুলবে।

সাধারণ কিছু প্রশ্ন (FAQs)

১.৫ টন এসি কি ২০০ বর্গফুট ঘরের জন্য যথেষ্ট?

হ্যাঁ, সাধারণভাবে ১.৫ টন এসি ১৮০ থেকে ২০০ বর্গফুট রুমের জন্য যথেষ্ট হয়। তবে, ছাদের গরম বা ঘরের মানুষের সংখ্যা বেশি হলে ২ টন নেওয়াই ভালো।

ইনভার্টার এসি কি নন-ইনভার্টারের তুলনায় ভালো?

ইনভার্টার এসি বিদ্যুৎ সাশ্রয় করে এবং তুলনামূলক দীর্ঘস্থায়ী। অন্যদিকে নন-ইনভার্টার এসি তুলনায় কম দামে পাওয়া যায়, তবে এতে বিদ্যুৎ খরচ বেশি আসে।

R32 এবং R410A রেফ্রিজারেন্টের মধ্যে পার্থক্য কী?

R32 রেফ্রিজারেন্ট ইকো ফ্রেন্ডলি এবং বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী। এটি গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের প্রভাব কমায় এবং R410A এর তুলনায় কুলিং পারফরম্যান্স ভালো দেয়।

কত বছর পর্যন্ত এসির কম্প্রেসার ওয়ারেন্টি থাকে?

বেশিরভাগ ব্র্যান্ড ৫ বছর পর্যন্ত কম্প্রেসার ওয়ারেন্টি দেয়। কিছু প্রিমিয়াম ব্র্যান্ড ১০ বছর পর্যন্তও দিয়ে থাকে। তবে পার্টস ও সার্ভিসিং ওয়ারেন্টি সাধারণত ১-২ বছর হয়।

ওয়াই-ফাই এসি আসলে কী এবং কেন দরকার?

Wi-Fi যুক্ত এসি মোবাইল অ্যাপ, ভয়েস কন্ট্রোল বা রিমোটলি নিয়ন্ত্রণ করা যায়। অর্থাৎ আপনি বাসার বাইরে থেকেও এসি চালু/বন্ধ করতে পারবেন।

Similar Posts